৪ চৈত্র, ১৪৩১
১৮ মার্চ, ২০২৫

বইমেলায় বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ চলবে

Admin Published: February 17, 2025, 3:24 pm
বইমেলায় বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ চলবে

ডিএনএন ডেস্ক: অমর একুশে বইমেলায় বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ অব্যাহত থাকবে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানোর পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখপ্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বইমেলার ওয়াশরুমের পাশে নারী ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ করা হবে। বইমেলার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ড্রিমার ডংকি স্পন্সরের সহায়তায় তাদের কার্যক্রম চালালেও, নির্ধারিত নীতিমালা মানতে ব্যর্থ হয়েছে। অনুমতি না নিয়ে মেলায় যত্রতত্র বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট স্টলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


জানা গেছে, নারীদের প্রয়োজন ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বইমেলার একটি কর্নারে প্রাণ- আরএফএল গ্রুপের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য ব্র্যান্ড “স্টে-সেফ” তাদের স্টলে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদর্শন ও বিতরণ করে আসছিল। তবে বইমেলায় কেন “গোপন পণ্য” বিক্রি করা হচ্ছে, তা নিয়ে আপত্তি তোলে একটি গোষ্ঠী। এরপর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান স্যানিটারি ন্যাপকিনের পরিবর্তে অন্য কোনো পণ্য স্টলে রাখতে প্রাণ- আরএফএলকে চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে “মব আশঙ্কার” কথা উল্লেখ করা হয়।


এরপর রোববার প্রতিষ্ঠানটি মেলা থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন সরিয়ে নেয়। পাশাপাশি বন্ধ রাখা হয় সংশ্লিষ্ট স্টল দুটি। রোববার বিকেলে বইমেলায় স্টল দুটি কালো কাপড় দিয়ে স্টল ঢেকে রাখা অবস্থায় দেখা যায়।


তখন বাংলা একাডেমি জানিয়েছিল, বই ছাড়া অন্যকিছু বিক্রির সুযোগ বইমেলায় নেই তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


তবে “স্টে-সেফ” এর উৎপাদক প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, মেলায় ন্যাপকিন বিক্রি করা হচ্ছিল, এমন নয়। এটি ফ্রি দেওয়া হচ্ছিল।


বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে রোববার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা একাডেমি বইমেলায় বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ অব্যাহত রাখার কথা জানায়।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রিসংক্রান্ত একটা ইস্যু বহুজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও ফোনে বহুজন বাংলা একাডেমির কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে বিশদ জানানো জরুরি বলে মনে করছে বাংলা একাডেমি।


বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজমের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলা একাডেমি আয়োজক হলেও বইমেলার প্রয়োজনীয় কাজগুলো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান করে থাকে। এবার এ দায়িত্ব পেয়েছে ‘ড্রিমার ডংকি’। কিন্তু স্পনসর ঠিক করার ক্ষেত্রে সংখ্যা এবং ধরন বিবেচনায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু নীতি লঙ্ঘন করেছে।


বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং ডায়াপার বিষয়ে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটি বাংলা একাডেমিকে জানিয়েছিল, ওয়াশ রুমের পাশে রেখে নারী ও শিশুদের প্রয়োজনমতো বিনামূল্যে এসব পণ্য সরবরাহ করবে। কিন্তু মেলা কর্তৃপক্ষ দেখতে পায়, তারা এ দুই পণ্যসহ আরও কিছু পণ্য বিক্রি করছে। ফলে তাদের স্টল বন্ধ করতে বলা হয়। শুধু স্যানিটারি ন্যাপকিন নয়; ডায়াপার, পেস্ট, ব্রাশসহ আরও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।


বাংলা একাডেমির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রসার ও ব্যবহার সম্পর্কে বাংলা একাডেমির কোনো প্রকার সংকোচ থাকার প্রশ্নই আসে না। বইমেলার পণ্যায়নের একটা ব্যাপার স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তার প্রমাণ, একদিকে আমরা অন্য অনেকগুলো পণ্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যদিকে ইভেন্টকে বলেছি, সৌজন্য হিসেবে তারা যেন স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রয়োজনমাফিক বিতরণ করে।


বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ওয়াশ রুমের পাশে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা রাখবে, এটাও আমরা নিশ্চিত করছি।