স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের মারধরের জেরে সোমবার সকাল থেকে রাজশাহীর পরিবহন শ্রমিকেরা নগরের শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বাস বন্ধ করে দেয়। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা অবধি বাস চলাচল স্বাভাবিক হয় নি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই রুটের যাত্রীরা। অনেকে ট্রেনে পাড়ি দিয়েছেন গন্তব্যে।
জানা গেছে, রাজশাহীর আল-মাহি পরিবহন নামের একটি বাসের চালক সাঈদ হাসান সোমবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকদের হাতে মারধরের শিকার হন। এ কারণেই শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
মারধরের শিকার সাঈদ হাসান জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার রাতে। সেদিন রাজশাহীর একটি বাসের শ্রমিকদের মারধর করা হয়। এরপর রবিবার দুপক্ষ বসেছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকেরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, আর মারধর করা হবে না। আগের মতোই রাজশাহীর বাসগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকতে পারবে।
কিন্তু সোমবার সকালে সাঈদ হাসান বাস নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গেলে তিনিসহ তার বাসের তিনজন শ্রমিককেই মারধর করা হয়। এছাড়া আল নাহিদ নামের রাজশাহীর আরেকটি বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকলে চালক, হেলপারসহ তিনজনকে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। লোকাল, গৌড় স্পেশাল, মহানন্দাসহ সব বাসই বন্ধ রয়েছে। রাজশাহীর ওপর দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে দেওয়া হচ্ছে না ঢাকা রুটে বাসগুলোকেও বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি জানান, শনিবার রাতে রাজশাহীর একটি বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন বাসশ্রমিক ছিলেন। বাসে ভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে রাজশাহীর বাসের কন্ডাক্টরের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর বাসটি চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকলে এর চালক, হেলপারসহ তিনজনকেই মারধর করা হয়। একজন রক্তাক্ত জখম হন।
এই ঘটনার পর বিষয়টির সমাধানের জন্য রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে গিয়ে দুপক্ষ বসেছিলেন। তাতে ফয়সালা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আশ্বাস দেয় যে তারা আর কোন শ্রমিককে মারধর করবে না। রাজশাহীতেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকদের মারধর করা হবে না। কিন্তু সোমবার সকালে রাজশাহীর দুটি বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকলে ছয়জন শ্রমিককে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদেই রাজশাহীর বাসশ্রমিকেরা বাস-চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।
পাখি জানান, বাস বন্ধ রাখলে যাত্রীদের দুর্ভোগ হবে। সরকারের বদনাম হবে। তাই তারা চাচ্ছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত না হলেও অন্তত রাজশাহীর গোদাগাড়ী পর্যন্ত বাসগুলো চলুক। কিন্তু শ্রমিকেরা বলছেন, গোদাগাড়ী পর্যন্ত বাস চালালে তেলের খরচই উঠবে না। তাই তারা এতে রাজি নন। এখন কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সে বিষয়টি তারা দেখছেন।
রাজশাহীর শ্রমিকদের অভিযোগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম আনারই বিষয়টি জটিল করছেন। তাঁর ইন্ধনেই রাজশাহীর শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে।